ববি প্রতিনিধি: সিদ্দিকুর রহমান
বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের (ববি) মেডিকেল সেন্টারে চিকিৎসা নিতে গেলে চিকিৎসক পাওয়া যায় না। এমনটাই অভিযোগ শিক্ষার্থীদের। শিক্ষার্থীরা বলছেন, অধিকাংশ সময় মেডিকেল সেন্টারে গিয়ে চিকিৎসা না পেয়ে নিরূপায় হয়ে ফিরে আসেন তারা।
বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিকেল সেন্টারের চিকিৎসা নিতে গিয়ে চিকিৎসককে না পাওয়ায় আক্ষেপ প্রকাশ করে বিশ্ববিদ্যালয়ের একাউন্টিং এন্ড ইনফরমেশন সিস্টেম বিভাগের ২০১৬-১৭ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী শামীম আহসান বলেন, আমি গত মাসে তিনদিন মেডিকেল সেন্টার গিয়ে একদিনও কর্তব্যরত চিকিৎসককে পায়নি। গেলেই মেডিকেল স্টাফরা বলেন তানজিন স্যারে এডমিন বিল্ডিংয়ে আছেন, শাম্মী আরা নিপা ম্যাডাম ছুটিতে। ১০মিনিট বসেন আসবেন স্যার, আধাঘন্টা অপেক্ষার পরও স্যারের দেখা মেলে না।
এদিকে, আজ মঙ্গলবার (২৮ মার্চ) বেলা ১১টা ৪০মিনিটে গুরুতর অসুস্থতা নিয়ে এক শিক্ষার্থী চিকিৎসা নিতে মেডিকেল সেন্টারে গিয়ে দেখেন কর্তব্যরত চিকিৎসকের দু’জনই অনুপস্থিত। এসময়, মেডিকেল স্টাফরা জানান স্যারে একটা প্রোগ্রামে গেছে ১০মিনিট পরে আসেন। ২০ মিনিটি পরে দুপুর ১২টার দিকে গেলে জানান ডাক্তার সাহেব তো আসেনি, মেয়র আসবে সেখানে গিয়েছেন।
এ বিষয়ে, মেডিকেল সেন্টারের কর্তব্যরত চিকিৎসক ও সিনিয়র মেডিকেল অফিসার ডা: মো: তানজিন হোসেন মুঠোফোনে বলেন, ঐ সময়ে আমি বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় একটা প্রোগ্রামে উপস্থিত ছিলাম। পরে এসে ঐ শিক্ষার্থীকে সেবা দেওয়া হয়েছে। এসময় সবধরনের অভিযোগ অস্বীকার করে তিনি বলেন, নিয়মিত তিনি মেডিকেল সেন্টারে থাকেন।
এছাড়াও বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিকেল সেন্টারে রয়েছে ওষুধের ঘাটতি, চিকিৎসাক্ষেত্রে চিকিৎসকের গাফিলতি। সাধারণ শিক্ষার্থীরা বলেন, মেডিকেল সেন্টারে ওষুধ বলতে নাপা এক্সট্রা অথবা প্যারাসিটামল। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে দামি ওষুধগুলো বাইরে থেকে কিনতে হয়।
মার্কেটিং বিভাগের ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী নূর মোহাম্মদ বলেন, আমার পক্স ওঠায় গত ২০ মার্চ আমি মেডিকেল সেন্টারে যাই চিকিৎসার জন্য। চিকিৎসক আমাকে কিছু পরামর্শ ছাড়া কিছুই দেননি। একটা প্রেসক্রিপশন পর্যন্ত লিখে দেয়নি। আমরা জানি ঔষধ দেয়, চর্মরোগের জন্য মলম দেয়। কিছুই তো দিলো না আমাকে।
বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রেজারার অধ্যাপক ড. মো. বদরুজ্জামান ভূঁইয়ার সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করলে বিষয়টি সম্পর্কে তিনি অবগত নয় জানিয়ে বলেন, বিষয়টি আমি দেখবো এবং পরবর্তীতে যেন শিক্ষার্থীরা এ ধরনের সমস্যার সম্মুখীন না হয় সেজন্য যথাযথ ব্যাবস্থা গ্রহণ করার আশ্বাস দেন তিনি।
এ বিষয়ে জানার জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. ছাদেকুল আরেফিনকে মুঠোফোনে একাধিকবার কল দিলেও ফোনে পাওয়া যায়নি।
উল্লেখ্য, লাইব্রেরি ভবনের নিচতলার মাত্র তিনকক্ষ বিশিষ্ট এ চিকিৎসা কেন্দ্রে আছেন দুইজন চিকিৎসক, একজন মেডিকেল এ্যাসিস্টান্ট ও একজন নার্স। জরুরি প্রয়োজনে রোগী বহনের জন্য রয়েছে একটিমাত্র অ্যাম্বুলেন্স। ফলে, প্রায় ১০ হাজার শিক্ষার্থী, শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারী যথাযথ চিকিৎসা সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।
এই সাইটে নিজস্ব সংবাদ প্রকাশের পাশাপাশি বিভিন্ন নিউজ সাইট থেকে সংগ্রহীত খবর সংশ্লিষ্ট সূত্রসহ প্রকাশ করা হয়। কোনো সংবাদ নিয়ে আপত্তি বা অভিযোগ থাকলে, অনুগ্রহ করে সংশ্লিষ্ট নিউজ সাইটের কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করুন।
বিনা অনুমতিতে এই সাইটের প্রকাশিত সংবাদ, আলোকচিত্র, অডিও বা ভিডিও কনটেন্ট ব্যবহার করা আইনত দণ্ডনীয়।