অপরাধ

ঠাকুরগাঁওয়ে ঝলঝলি পুকুর উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক দেড়মাস ধরে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন।

ডেস্ক রিপোর্ট

২০ মার্চ ২০২৩ , ১০:০৮:০৮ প্রিন্ট সংস্করণ

ঠাকুরগাঁও জেলা প্রতিনিধি:

চাকুরি দেওয়ার নামে প্রায় ৫০ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নিয়ে দীর্ঘ ১ বছরেও নিয়োগ দিতে না পেরে চাকুরি প্রত্যাশিদের চাপের মুখে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার ঝলঝলি পুকুর আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক অখিল চন্দ্র রায় ।এদিকে প্রধান শিক্ষক কর্মস্থলে না থাকায় বিপাকে রয়েছেন ওই বিদ্যালয়ের শিক্ষক-কর্মচারী ও শিক্ষার্থীরা।
ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার ২১ নং ঢোলারহাট ইউনিয়নে ১৯৯২ সালে স্থাপিত হয় ঝলঝলি পুকুর আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়। এই বিদ্যালয়ে বর্তমানে শিক্ষক-কর্মচারী সংখ্যা ১৪ জন।এছাড়া ৬ষ্ঠ হতে ১০ম শ্রেনী পর্যন্ত শিক্ষার্থী রয়েছে ২৪১ জন।বর্তমানে বিদ্যালয়ের মাঠে মাটি ভরাট করা হয়েছে।মাঠের ধুলোবালির কারণে খেলাধুলা করতে পারছে না শিক্ষার্থীরা।
এদিকে ঝলঝলি পুকুর আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক অখিল চন্দ্র রায় দীর্ঘ দেড় মাস ধরে বিদ্যালয়ে অনুপস্থিত রয়েছেন।
বর্তমানে তিনি কোথায় বা কি অবস্থায় রয়েছেন কেউ তা বলতে পারছেন না। এমনকি দিনের বেশিরভোগ সময়ে তার মোবাইল ফোন বন্ধ থাকছে। এ অবস্থায় বিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান শিক্ষক অতুল চন্দ্র বর্মন ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব পালন করলেও তাকে কাগজে কলমে দায়িত্ব অর্পণ করা হয়নি। তারপরও তার স্বাক্ষরে ফেব্রুয়ারী মাসের মাসিক বিল সীট ব্যাংকে পাঠানো হয়। প্রধান শিক্ষক কি কারণে বিদ্যালয়ে আসেন না সে বিষয়ে কেউ কোন কিছু বলতে পারছেন না।
তবে নির্ভরযোগ্য একটি সূত্রে জানা যায়, বছর খানেক পূর্বে ওই বিদ্যালয়ে ল্যাব এসিস্ট্যান্ড,আয়া,পরিচ্ছন্নতা কর্মী ও অফিস সহায়ক পদে লোক নিয়োগের জন্য বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়। যথারীতি বেশ কয়েকজন প্রার্থী আবেদনও করে। কিন্তু কমিটির লোকজনের মধ্যে বিরোধ দেখা দিলে নিয়োগ প্রক্রিয়া বেশিদূর এগুতে পারে নি।
অভিযোগ রয়েছে ,বিভিন্ন পদে নিয়োগ প্রত্যাশি প্রার্থীদের নিকটা একই পদে ততোধিক প্রার্থীর নিকট থেকে প্রায় ৫০ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নেয় প্রধান শিক্ষক। কিন্তু পূর্নাঙ্গ কমিটি না থাকায় তিনি নিয়োগ দিতে পারছেন না। এদিকে প্রধান শিক্ষকের চাকুরির বয়সসীমা শেষ পর্যায়ে। ২০২৫ সালের প্রথম দিকে তিনি চাকুরি হতে অবসর গ্রহন করবেন। এ অবস্থায় ২/১ জন প্রার্থী হয় চাকুরি না হয় টাকা ফেরত পেতে প্রধান শিক্ষককে চাপ দিয়ে আসছেন। রাস্তাঘাটে কিংবা সময়ে অসময়ে বাড়িতে গিয়ে হুমকি দিয়ে আসছেন কেউ কেউ। ড়এ অবস্থায় কিভাবে কি করবেন ভেবে কূল কিনারা না পেয়ে চাপের মুখে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন তিনি । দীর্ঘ দেড়মাস হতে তিনি বিদ্যালয়ে আসছেন না। এ অবস্থায় গত ফেব্রুয়ারী মাসের শিক্ষকদের বিলসীটে স্বাক্ষর করেন সহকারী প্রধান শিক্ষক অতুল চন্দ্র বর্মন।
এ ব্যাপারে সহকারী প্রধান শিক্ষক অতুল চন্দ্র বর্মন জানান, প্রধান শিক্ষক বেশ কিছুদিন থেকে বিদ্যালয়ে আসছেন না।কি কারণে তিনি বিদ্যালয়ে আসেন না তা তিনি বলতে পারছেন না। তিনি লিখিতভাবে আমাকে দায়িত্ব অর্পণ না করলেও প্রধান শিক্ষকের মৌখিক নির্দেশে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক হিসেবে দায়িত্ব পালন করে আসছি।
এ ব্যাপারে প্রধান শিক্ষক অখিল চন্দ্র বর্মন বলেন,আমি অসুস্থ থাকায় চিকিৎসার জন্য হঠাৎ ঢাকায় চলে আসি এবং অবস্থান করছি। তড়িঘড়ি ঢাকায় আসায় কাউকে লিখিতভাবে দায়িত্ব অর্পণ করতে পারিনি।সহকারী প্রধান শিক্ষককে ফোনে নির্দেশ দিয়েছি ।তারপরও আমি নিজে প্রতিদিন ফোনে খোজখবর নিচ্ছি।
অপরদিকে উপজেলা মাধ্যমিক কর্মকর্তা আব্দুর রহমান বলেন,প্রধান শিক্ষক ছাড়া কোন বিদ্যালয় চলতে পারে না।তাছাড়াও তিনি চিকিৎসা বা অন্য কাজে বাইরে গেলে একজন শিক্ষককে দায়িত্ব প্রদান করতে হবে। বিনা ছুটিতে দীর্ঘদিন অনুপস্থিত থাকলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

শেয়ার করুন:

আরও খবর

Sponsered content