দেশজুড়ে

আলোকবর্ষী এক নক্ষত্রের অবসরগ্রহণ।

ডেস্ক রিপোর্ট

২৩ মার্চ ২০২৩ , ১১:৪৫:২৫ প্রিন্ট সংস্করণ

লেখক : মো ওয়ালীউর রহমান আখঞ্জী
বিএ অনার্স (ইতিহাস) সিলেট।

জীবন বিচিত্র দৃশ্যের মধ্য দিয়ে এগিয়ে চলা মহাসারতী। যে জীবনে মানুষ মহৎ সৃষ্টির মাধ্যমে জন্ম নেয় এক নক্ষত্রের ন্যায়। যে নক্ষত্র নিজের আলোর পূর্ণ বিকাশসাধন করে সৃষ্টির কল্যাণে। সব জীর্ণ, শীর্ণ, অন্ধকার বিমোচন করে প্রজ্জ্বলিত করে। সেই সকল গুণাবলির সম্মিলিত আবির্ভাব গঠেছিল ১৯৮৯ সনে ভাটিবাংলার হাওর বেষ্টিত প্রান্তিক জনপদের জীর্ণ শীর্ণ এক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শতবর্ষী মেধা ও মননশীলতার, শিক্ষাবিতরণের এক প্রাণ পুরুষ উজ্জ্বল নক্ষত্রের। যিনি সুদূর নেত্রকোনা জেলা থেকে আসেন সুনামগঞ্জ জেলার, তাহিরপুর উপজেলার উত্তর শ্রীপুর ইউনিয়নের জনতা উচ্চ বিদ্যালয়ে আলোরমশাল হয়ে। যিনি অন্ধকারাচ্ছন্ন, কুসংস্কারাচ্ছন্ন, শিক্ষারআলোকহীন পরিবেশে আলোর মশাল হয়ে দূর করার মহান ব্রত নিয়ে জড়িয়েছিলেন শিক্ষকতা পেশায়। যিনি ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র মহৎকর্মযজ্ঞে গড়ে তুলতে সক্ষম হয়েছেন আলোঘর। যে প্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠা লগ্নে থেকে বিভিন্ন বাঁধা বিপত্তি উপেক্ষা করে নিজের প্রাঞ্জলতাগুণ, সুদূরদৃষ্টিভঙ্গি, উন্নত চিন্তাভাবনায় ক্ষুদ্র প্রতিষ্ঠানকে গড়ে তুলেছেন বৃহৎ প্রতিষ্ঠানে, আলোর পূর্ণ বিকাশের এক অনন্য প্রতিষ্ঠানে।শিক্ষক এমন একটা পেশা যে পেশায় শুধু তথ্য- পরিবেশন করেন না। শিক্ষক তার শিক্ষার্থীদের বিশ্ব মঞ্চের সাথে সামঞ্জস্য করে চলতে শিখায়।
যিনি ১৯৮৯ সালে এই প্রতিষ্ঠানে এসে শিক্ষার আলো প্রসার করে প্রজ্জ্বলিত করেছেন অত্র এলকায়। যার হাতে গড়া বিভিন্ন শিক্ষার্থী আলোকবর্ষ হয়ে ছড়িয়ে আছে দেশ – দেশান্তরে। যারা আলোর পূর্ণ অনুসারী হয়ে দেশ ও দেশের মানুষের সেবায় নিজেদের করেছে সমপ্রর্ণ। কেউ বা নিয়েছে মহান পেশা সেই শিক্ষক এর অনুগামী হয়ে। এভাবেই দিনকে দিন আলোর পূর্ণ প্রসারিত হচ্ছে। আবার অনেকেই নতুন দিগন্তের পথ উন্মোচনে এগিয়ে চলছে মহৎকর্মের বাসনায়। সুদীর্ঘ তেত্রিশ বছর মহান পেশা শিক্ষকতায় আলোর প্রজ্জ্বলন ঘঠিয়ে অবসর গ্রহণ করেন অত্র বিদ্যালয়ের উজ্জ্বল নক্ষত্র খ্যাত সাধনচন্দ্র পাল।
তারই ধারাবাহিকতায় মান্যবড় শিক্ষক সাধন চন্দ্র পাল অবসরগ্রহণ উপলক্ষে অত্র বিদ্যালয় কতৃপক্ষ , চলমান ও প্রাক্তন শিক্ষার্থীদের সম্মিলনে বিদায়ী অনুষ্ঠানে জিয়াউর রহমান আখঞ্জী ও সজল চন্দ্র সঞ্চালনায়, বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক এর সভাপতিত্বে বিদায়ী সংবর্ধনা অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। উক্ত অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন জনতা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতা নুরুল ইসলাম সাবেক চেয়ারম্যান,
বর্তমান চেয়ারম্যান আলী হায়দার, বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোদাচ্ছির আলম সোবল, হাবিবুর রহমান, রফিকুল ইসলাম, তাফস চন্দ্র, সুতী হালদার, খুরশেদ আলম, বাদল চন্দ্র , আলআমিন সিকদার, নিতাই চন্দ্র পাল (সহকারী শিক্ষক স.প্রা.বি),
, ম্যানেজিং কমিটির সদস্য শামনূর আখঞ্জী, শাহনূর মিয়া ( সাবেক মেম্বার) ,কনকন তালুকদার, ইমানূর মিয়া, বদিউজ্জামান,
সুরঞ্চিত পাল পল্লী চিকিৎসক,
বিদায়ী সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে স্যারের স্মৃতিচারণ করে শিক্ষার্থীরা আবেগাপ্লুত হয়ে বিদায়ী বক্তব্য রাখেন। এসময় বক্তব্য রাখেন বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন- শ্রীপুর উত্তর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মো. আলী হায়দার, অত্র বিদ্যালয়ের প্রতিষ্টাতা সভাপতি সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান মো. নুরুল ইসলাম,
প্রাক্তন শিক্ষার্থী সাংবাদিক ও ব্যবসায়ী শামসুল আলম আখঞ্জী,
সাংবাদিক রাজু আহমেদ রমজান, সহকর্মী হাবিবুর রহমান শিক্ষক, সহকর্মী রফিকুল ইসলাম শিক্ষক , সাংবাদিক আব্দুর রাজ্জাক, জিয়াউর রহমান আখঞ্জী রাজনীতিবিদ, সজল চন্দ্র চাকুরীজীবি, কাজল খাঁন, খলিন আহমেদ, চন্দন পাল, আইভী রহমান আখঞ্জী (সহকারী শিক্ষক স.প্রা.বি), মাছুম আহমেদ(সহকারী শিক্ষক স.প্রা.বি), সৌরভ তালুকদার,
বিদায়ী শিক্ষার্থী রাব্বি , লাভনী
ইমা আক্তার, দশম শ্রেনীর শিক্ষার্থী শিফা আক্তার লাবনী, ৬ষ্ট শ্রেনীর শিক্ষার্থী গৌরব পাল প্রমুখ।
এসময় শিক্ষার্থীরা তাদের জীবনে সাথে স্মৃতিবিজড়িত বিদ্যালয়ের ও শিক্ষকের আদর্শ, সুদীর্ঘ কর্মজীবনের গৌরবের কর্ম তুলে ধরেন।
মানুষ মরে যায়, কিন্তু পুঃনোরোজ্জীবন গঠে বহুবার। কর্মের গুণেই মানুষ অমর হয়ে রয়।
তাই তো কবি সাহিত্যিকরা বলেন কীর্তিমানের মৃত্যু নাই।
কীর্তিমান তো তারাই যারা মহৎকর্মের মাধ্যমে বেঁচে থাকে সৃষ্টির আবরণে। তাই তো শিক্ষার্থীরা বলেন – যেতে নাহি দিতে হায়, তবো দিতে হয়, তবোও চলে যায় । এ বিদায় কর্মজীবনের বিদায় এ বিদায় কখনো হৃদয়ের আঙ্গিনা থেকে দূর করতে পারবে না। স্যারের সর্বাঙ্গীণ মঙ্গলকামনা করে বিদায়ী সংবর্ধনা বক্তব্য শেষ হয়।

 

শেয়ার করুন:

আরও খবর

Sponsered content