দেশজুড়ে

হাওরাঞ্চলে বিলুপ্তির পথে প্রায় (বল্লোয়ার ফুল) বুনো গোলাপ

ডেস্ক রিপোর্ট

২৪ মার্চ ২০২৩ , ১০:৫৮:১৫ প্রিন্ট সংস্করণ

 

এস এ আখঞ্জী  তাহিরপুরঃ বাংলাদেশের হাওরাঞ্চলের বিল- ঝিল, কানদার পরিত্যক্ত
ভূমিতে প্রাকৃতিক ভাবেই বেড়ে ওঠত (বল্লোয়ার ফুল) বা বুনো গোলাপ। সবুজ শ্যামল এ দেশের জীববৈচিত্র‍্য ও প্রাকৃতিক ভারসাম্য রক্ষায় সহায়ক হিসাবে বিশেষ ভূমিকা রাখত বনাঞ্চল ও হাওরাঞ্চলে সৌন্দর্যে। কালের বিবর্তনে অনেক এলাকা থেকে বুনো গোলাপ হাড়িয়ে গেছে। কিছুটা রয়েছে সুনামগঞ্জের টাংগুয়ার হাওর সংরক্ষিত এলাকায়। বিভিন্ন  প্রজাতির পাখপাখালি মিটাপানির মাছ জলজ উদ্ভিদসহ বিভিন্ন প্রাণী আর কিছু বিশেষ গাছপালা নিয়ে গড়ে উঠেছে হাওর ইকোসিস্টেম।হাওরগুলো মূলত রয়েছে দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের সুনামগঞ্জ, সিলেট,মৌলভীবাজার,হবিগঞ্জ,নেত্রকোনা, কিশোরগঞ্জ,ব্রাহ্মণবাড়িয়া।তবে সুনামগঞ্জে  সবচেয়ে বেশি হাওর রয়েছে।তার মধ্যে টাঙ্গুয়ার হাওর সবচেয়ে অন্যতম।দেশের একমাত্র বুনো গোলাপ( বলুয়ার ফুল)টি বিভিন্ন হাওরে বিলুপ্ত হলেও এখন পর্যন্ত টাঙ্গুয়ার হাওরের দুই একটা হাওরে এখনো দেখা যায়।

জীববৈত্র‍্যের এই গুরুত্বপূর্ণ আধার হাওরের সম্পদ ক্রমশ বিলুপ্ত হচ্ছে।হিজল আর করচগাছের সংখ্যা দিনে দিনে কমে যাচ্ছে।হারিয়ে যাচ্ছে শিঙাড়া,লাল পদ্মসহ,নানা জলজ উদ্ভিদ। হিজল করচ,বরুণ ও নলখাড়ার সমন্বয়ে যে বনাঞ্চল গড়ে উঠেছিল তার অধিকাংশই এখন আর নেই।হাওরের যে উদ্ভিদ প্রজাতিটি এখন সবচেয়ে দুর্লভ ও বিপন্ন সেটি হচ্ছে বুনো বা জংলি গোলাপ। তবে হাওরবাসী কাছে এই ফুল গুজাকাঁটা বা বল্লোয়ার ফুল নামেই পরিচিত। গোলাপ চেনে না এমন কেউ নেই।তবে বুনো গোলাপকে শুধু হাওরবাসীই ভালো চেনে।সম্প্রতি টাঙ্গুয়ার হাওর ঘুরে হাওরের পইল্যার বিলের কান্দা ও রাজারদাইড় নামক কান্দার বিচ্ছিন্ন ভাবে খুঁজে পাওয়া গেছে এ গোলাপ। বুনো গোলাপের বৈজ্ঞানিক নাম Rosa cinophylla। ঝোপময় কাঁটাযুক্ত গুল্ম প্রকৃতির উদ্ভিদ, সাধারণত ৩থেকে ১৫ফুট লম্বা হয়।বছরের পাঁচ-ছয় মাস পানির নিচে থাকে কাণ্ডের মূল অংশ।সাজানো বাগানে খানদানি গোলাপগুলো যখন বৃন্তচ্যুত হতে থাকে,ঠিক তখনই সাদা পাপড়ি নিয়ে গ্রীষ্মের প্রারম্ভে হাওরের মাঝে আত্মপ্রকাশ করে অনাদরের বুনো গোলাপ। ফেব্রুয়ারি থেকে জুলাই পর্যন্ত ফুল ধরে এতে ফুল সুগন্ধি, পাপড়ি পাঁচটি। বীজে চারা গজায়। বীজ বা চারা থেকে বাড়ির বাগানে কেউ এ গোলাপ করতে পেরেছে কি-না এমন তথ্য এখনো পাওয়া যায়নি।

স্থানীয়দের সাথে কথা বলে জানাযায় এই বিপন্ন প্রজাতির বুনো গোলাপটির হারিয়ে যাওয়ার প্রধান কারণ হলো কৃষি ও জ্বালানি এবং ঔষুধের জন্য শেকড় সংগ্রহ সহ মানবসৃষ্ট বিভিন্ন কারনে এই বিপন্ন প্রজাতির বুনো গোলাপ হারিয়ে যাচ্ছে। স্থানীয়রা জানায় এই বিপন্ন প্রজাতির বুনো গোলাপ সংরক্ষণ করতে প্রয়োজন স্থানীয়দের সচেতনতা, দায়িত্বশীলদের বিশেষ উদ্যোগের মাধ্যমে প্রতিটি এলাকা চিহ্নিত করে,সংরক্ষণের আওতায় এনে একে টিকিয়ে রাখা সম্ভব।

শেয়ার করুন:

আরও খবর

Sponsered content