দেশজুড়ে

মিঠামইনে শিক্ষিকা তানিয়ার বিরুদ্ধে মুক্তিযোদ্ধার ভুয়া কন্যা সেজে ১৫ বছর চাকরির অভিযোগ। তদন্ত শুরু

২৩/০৪/২০২৫

 

বিজয় কর রতন (মিঠামইন) কিশোরগঞ্জ প্রতিনিধি:-তানিয়া আক্তার সহকারী শিক্ষিকা মিঠামইন সদর ইউনিয়নের বোরণপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের। তার বাড়ি উপজেলা ঢাকী ইউনিয়নের গোবিন্দ পুর গ্রামে।তানিয়ার চাচা একজন মুক্তিযোদ্ধা। নাম তার গোলাম ফারুক।মুক্তিযোদ্ধা গোলাম ফারুক ২০১০ সালে তার আপন ভাই জিতু মিয়ার মেয়ে তানিয়াকে নিজের সন্তান বানিয়ে মুক্তিযোদ্ধা কোটায় প্রাইমারি স্কুলে শিক্ষিকা পদে চাকরি পাইয়ে দেন।তৎকালীন সময়ে বিষয়টি অন্যান্য মুক্তিযোদ্ধারা জানতেন,কিন্তু প্রকাশ করেননি।সম্প্রতি ঢাকী ইউনিয়নের গোবিন্দ পুর গ্রামের শফিকুল মিয়া নামে জনৈক ব্যাক্তি মুক্তিযোদ্ধা বিষয়ক মন্ত্রণালয় সহ বিভিন্ন দপ্তরে তানিয়া ও তার চাচা গোলাম ফারুকের বিরুদ্ধে তথ্য গোপন সহ ১৫ বছর যাবৎ প্রতারণার মাধ্যমে চাকরি করার অভিযোগ দায়ের কারেন।অভিযোগকারী শফিকুল ইসলাম বলেন, মুক্তিযোদ্ধা কোটা নিয়ে দেশে এত বড় আন্দোলন হয়ে সরকার বিদায় হয়েছে। সেই জায়গায় মুক্তিযোদ্ধার ভুয়া কন্যা সেজে ১৫ বছর চাকরি করছে।তিনি সঠিক তদন্তের মাধ্যমে শিক্ষিকা তানিয়া ও মুক্তিযোদ্ধার বিচার দাবি করেন।অভিযোগের বিষয়টি তদন্তের জন্য কিশোরগঞ্জ জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তার কার্যালয় থেকে মিঠামইন উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তাকে তদন্ত প্রতিবেদন দেওয়ার নির্দেশ দেন।বিষয়টি এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। এলাকাবাসী জানেনা তানিয়ার চাকরি কিভাবে হলো সরজমিনে সোমবার ঢাকী ইউনিয়নের গোবিন্দ পুর গ্রামে তানিয়ার গ্রামের বাড়িতে গেলে পুরো বিষয়টি সামনে চলে আসে।প্রথমে কথা হয়,মুক্তিযোদ্ধা গোলাম ফারুকের সাথে তানিয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি জোর দিয়ে বলেন,তানিয়া আমার ঔরশ জাত সন্তান। তিনি উওেজিত হয়ে যান প্রশ্ন করতে গেলে তিনি বলেন, এলাকায় কিছু লোকের সাথে জমি জমার বিষয় নিয়ে আমাদের সাথে বিরোধ রয়েছে। তারা এসকল অপপ্রচার করছেন। তিনি এসকল বিষয় আমলে নেননি। তানিয়ার বাবা জিতু মিয়া এখনও জীবিত। কথা হয় তার সাথে তিনি বলেন, আমি এগুলি জানি না।আমার ভাই তানিয়ারে কেমনে চাকরি দিছে হে জানে।তানিয়া আমার মেয়ে। নাম প্রকাশ না করার শর্তে তানিয়ার ঘনিষ্ঠ আত্নীয় স্বজন ও প্রতিবেশী সহ তানিয়ার আপন চাচি বলেন,তানিয়া জিতু মিয়ার মেয়ে। মুক্তিযোদ্ধা গোলাম ফারুক দুটি বিয়ে করেছেন। তার দু,পক্ষেরই ছেলে মেয়ে রয়েছেন।তানিয়া গোলাম ফারুকের মেয়ে নয়।কিভাবে চাকরি হইছে আমরা জানি না।শুধু শুনছি চাচা মুক্তিযোদ্ধার কারণে চাকরিটা হইছে। মেয়ে বানাইয়া চাকরি দিছে আমরা জানি না।বোরণ পুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে গিয়ে কথা হয়, তানিয়ার সাথে তানিয়া ও একই কথা বলেন যে গোলাম ফারুক তার বাবা।তানিয়াদের গ্রামে একটি গোষ্ঠীর সাথে জমিজামা নিয়ে বিরোধ রয়েছে। সেই কারণে তারা আমাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ করছেন।তানিয়ার এন,আইডি কার্ডে তার বাবার নাম গোলাম ফারুক কিন্তু মায়ের নাম হেলেনা যা তানিয়ার আসল মা।এ ব্যাপারে জিজ্ঞেস করলে কোনো সঠিক উওর পাওয়া যায়নি।তানিয়ার স্বামী একজন স্কুল শিক্ষক যার নাম ইয়াহিয়া। বিগত সরকারের আমলে দলীয় প্রভাবের কারণে এতদিন কেউ মুখ খুলেনি। মিঠামইন উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার নরুল ইসলাম সিদ্দিকী ও অপর মুক্তিযোদ্ধা আমজাদ হোসেন এর সাথে কথা হয়।তারা জানান,বিষয়টি অনেকেই অবগত কিন্তু এতদিন কেউ মুখ খুলেনি।এখন যেহেতু তদন্ত হচ্ছে মূল বিষয়টা বের হয়ে আসবে।এরকম আরও রয়েছে বলেও তিনি মনে করেন। তদন্তে প্রমাণিত হলে দুজনই শাস্তি পাবে।
উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা সাদিকুর রহমান জানান,জেলা শিক্ষা কর্মকর্তার কার্যালয় থেকে বিষয়টি তদন্তের দায়িত্ব পেয়েছেন।সঠিক তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিল করা হবে।তদন্ত চলমান রয়েছে।

বার্তা প্রেরক
বিজয় কর রতন

শেয়ার করুন:

আরও খবর

Sponsered content