কৃষি

বিয়ের দাবীতে যুবকের বাড়িতে কিশোরী, রাজি না হওয়ায় কিশোরীর আত্নহত্যা

ডেস্ক রিপোর্ট

২৮ মার্চ ২০২৫ , ১১:১৫:২৯ প্রিন্ট সংস্করণ

 

মোঃ আমজাদ হোসেন
দেবিদ্বার, কুমিল্লা।

স্টাফ রিপোর্টারঃ
প্রেমিকের বাড়িতে বিয়ের দাবিতে এক কিশোরী, প্রেমিক বিয়েতে রাজি না হবার কারণে প্রেমিকের বাড়িতেই প্রেমিকার আত্মাহত্যা।

ঘটনাটি কুমিল্লা দেবিদ্বার উপজেলার জাফরগঞ্জ ইউনিয়নের গঙ্গানগর গ্রামের।
নিহত স্কুল ছাত্রী নাম জান্নাতুল মীম(১৪), সে জাফরগঞ্জ মাজেদা আহসান মূন্সী বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণীর ছাত্রী ছিল। সে জাফরগঞ্জ গঙ্গানগর এলাকায় ডিস লাইন কর্মচারী সবুজ মিয়ার বড় মেয়ে।

সবুজ মিয়া জাফরগঞ্জ গ্রামের সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান সোহরাব হোসেনের ভাই মোঃ হেলালের ডিস ও ওয়াইফাই লাইনের কর্মচারী।

স্থানীয়রা জানান, নিহত স্কুল ছাত্রীর বাবা ডিস ও ওয়াইফাই লাইনের কর্মচারী সবুজ মিয়া, তার বাড়ি বরগুনার সদর উপজেলার আহেলাপাতলাকাটা গ্রামে। তার বাবার নাম মৃতঃ আব্দুল কাদের আখন্দ।
সবুজ প্রায় ১৬ বছর পূর্বে জীবীকার নির্বাহের তাগিদে জাফরগঞ্জ এলাকায় এসে দিনমজুরের কাজ শুরু করেন।

কিছুদিন পর সাবেক চেয়ারম্যানের ভাই তাকে জাফরগঞ্জ বাজারের ডিস লাইন ও ওয়াইফাই ব্যবসায়ি হেলাল মিয়ার কর্মচারী হিসেবে যোগদান করেন। সবুজ মিয়ার নিজ বাড়িতে পূর্বের সংসার থাকলেও আবারো বিয়ে করেন গঙ্গানগর গ্রামে। এখানেই ২ পুত্র সন্তান ও এক কণ্যা সন্তানের জনক হন। মেয়ে জান্নাতুল মীম (১৪) সবার বড়, সে জাফরগঞ্জ মাজেদা আহসান মূন্সী বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণীতে পড়ত। স্কুলে আসা যাওয়া পথে পাশর্বর্তী ছগুরা গ্রামের মোঃ সেলিম মিয়ার বখাটে পুত্র শাহেদ(১৬) নামে এক কিশোর তাকে প্রেমের প্রস্তাব দিয়ে স্কুলে যাওয়া আসার সময় উত্তক্ত করত। এ নিয়ে একাধিক বার সালিস হলেও শাহেদ শুধরায়নি । মীম প্রেমের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করায় তাকে তার বাড়িতে এসে একাধিকবার মারধর করে। বাবা সবুজ বাঁধা দিলে তাকেও একাধিকবার মারধর এবং বাসা ভাংচুর করে।
প্রায় ৭ মাস পূর্বে পরিবারে নিরাপত্তার জন্য বাসা ছেড়ে উপজেলার ফতেহাবাদ ইউনিয়নের মোকামবাড়ি সরকার বাড়িতে ভাড়া বাসায় চলে যান। এরই মধ্যে মীমের সাথে শাহেদের প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে। প্রেম গভীর হয়ে উঠলে।

গত বৃহস্পতিবার (২৭ মার্চ) সকাল ১০ টায় জান্নাতুল মীম গঙ্গানগর গ্রামে নানার বাড়িতে বেড়াতে আসার কথা বলে বাড়ি থেকে আসে, প্রেমিকের সাথে দেখা করতে ছগুড়া গ্রামে শাহেদের বাড়িতে চলে আসে। শাহেদকে বিয়ে করতে চাঁপ দিতে থাকে । শাহেদ এতে রাজী না হলে মীম আত্মহত্যার হুমকী দেয়। এক পর্যায়ে মীম তার সাথে রাখা ঘুমের ৩০টি টাইমেক্স টেবলেট এক সাথে সেবন করে ফেলে। এতে মীম অসুস্থ্য হয়ে পড়লে শাহেদ তার বন্ধুদের সহযোগীতায় কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যায়। ওখানে তার পাকস্থলি ওয়াস করার সময় বিকেল ৪ টা ৪৫ মিঃ মারা যায়।

নিহত মীমের বাবা সবুজ মিয়া জানান, বৃহস্পতিবার সকাল ১০টায় তার নানার বাড়িতে বেড়াতে যাওয়ার কথা বলে বের হয়। দুপুরে তার কথিত প্রেমিক শাহেদের নেতৃত্বে কিশোরগ্যাংই তার মেয়েকে তুলে নিয়ে ধর্ষণপূর্বক হত্যা করে মুখে বিষ ঢেলে আত্মহত্যা করেছে বলে প্রচার করে।

এ ব্যপারে দেবিদ্বার থানার অফিসার ইনচার্জ শামসুদ্দিন মোহাম্মদ ইলিয়াছ জানান, মেয়েটি প্রেমের টানে তার প্রেমিকের বাড়িতে যেয়ে বিয়ের চাপ দিচ্ছিল, রাজী না হওয়ায় সে বিষপানে আত্মহত্যা করে। বয়সে দু’জনই কিশোর কিশোরী। পরে কুমেক হাসপাতালে চিকিৎসারত অবস্থায় মারা যায়। নিহতের বাবার দাবী তাকে নেশাজাতীয় ঔষধ সেবনে ধর্ষণ শেষে হত্যা করে মুখে বিষ ঠেলে দিয়েছে। কোতয়ালী থানা পুলিশ তার ছোরতহাল রিপোর্টে আঘাতের কোন চিহ্ন পাওয়া যায়নি। ছোরতহাল রিপোর্ট তৈরী পূর্বক ময়না তদন্তের জন্য মর্গে পাঠিয়েছে। রিপোর্ট আসার পরই সঠিক তথ্য বলা যাবে।
জানান, দুপুর সাড়ে ১২টায় শাহেদ ফোনে জানায় তার মেয়ে অসুস্থ্য হয়ে পড়ায় তাকে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাচ্ছে। তার পর থেকে শাহেদ ফোন কন্ধ করে দেয়। সন্ধ্যায় কুমেক হাসপাতালে যেয়ে দেখেন তার মেয়ে মৃত অবস্থায় পড়ে আছে।

শেয়ার করুন:

আরও খবর

Sponsered content