বিজয় কর রতন, ষ্টাফ রিপোর্টার কিশোরগঞ্জঃ মিঠামইনের চমকপুরের কৃষক হারিছ মিয়া বলেন,নদারেরে হাওরে ২৮আর ২৯ মিলাইয়া ৩ কানি ক্ষেত করছিলাম।ধান হইবার কথা ৩০০ মণ ক্ষেত কাইট্টা ধান পাইছি ৫ মণ।গরুর খাওনের লাগি কিছু বন কাইট্টা আনছি। হেই বন গরু ও খায়না।সুদের উপরে টেহা আইন্না ক্ষেত করছিলাম,টেহা দিমু কইথাইক্কা নিজে কামু কি হেই চিন্তায় বাঁচি না। রোজার পরে দেশ থাইক্কাা যাইতে হইবো।চমকপুর গ্রামের অপর কৃষক জীবন মিয়া বলেন,জোয়াইরা হাওরে ২ কানি জমি করছি ২৮ ও২৯ ধান।হেই জমিতে রোগে ধইরা সাদা হয়ে গেছে। ধানের চারার মধ্যে খালি চুচা।ক্ষেতে কাঁচি যাইবো না।তার পরিবারে ৮ জন মানুষ। অহন মাইনষের কলায় কামলা দিয়া কিছু কিছু ধান আইন্না পোলাপাইন লইয়া রোজার মাসে চলতাছি।ঈদের পরে অন্য কামের ধান্দায় দেশ ছাড়তে হইবো।রোজার দিন ঘরে খাওন নাই,কথা গুলি বললেন,ঘাগড়া হাওরের নদার বনদের কৃষক মোশাররফ।
৫ কানি ক্ষেত করেছেন তিনি এর মধ্যে ২৮ ২ কানি ও ২৯ ৩ কানি।ক্ষেত কাটার কোনো বাও নাই।সারা ক্ষেত এই রোগে ধরছে।প্রতিদিন তিনি সকাল সন্ধ্যা ক্ষেতের আইলে বসে বিলাপ করছেন।মহাজনের ভয়ে বাড়ি আসছেন না।অনেক সময় হাওরেই রাত কাটান।জোয়াইরা বিলের কৃষক ছওর মিয়া জানান,৫ একর জমি করেছেন জমিতে দোষ পইরা সব চুচা হয়ে গেছে। গরুর খাওন এর লাগিও আনন যাইবো না।মিঠামইনের চেঙ্গা বিলের কৃষক ছুবুর মিয়া বলেন,তিনি ৩ একর জমি ২৯ করছিলাম কাঁচি যাইতো না ক্ষেতে কেমনে চলুম পোলাপাইন লইয়া সরকারও কোনো টেহা দিতনা সামনে ঈদ পোলাপাইনের লাগি কাপড় কিনমু না পেটের খরচ জোগাইমু চিন্তা করতাছি।একই হাওরের ছিদ্দিক মিয়া বলেন,৬ একর জমি করেছি কিছু পাঁকছে বাকি জমি ব্লাষ্ট রোগে ধরছে।ধান পাঁকতে পাঁকতে সারা জমি শেষ হইবোএকই হাওরের ছওর মিয়া, লতিফ মিয়া,দুলাল মিয়া,হেলাল মিয়া,বাবু মিয়া,আক্কাছ মিয়া, মোশাহিদ মিয়া,নুর ইসলাম মিয়া একই কথা বলেন।এবছর হাওরে যারা শ্রমজীবি নরনারী মজুরি বিক্রি করে জীবিকানির্বাহ করে স্হানীয় শ্রমিক ছাড়াও ধান কাটার মৌসুমে উওরবঙ্গের রংপুর, গাইবান্দা,কুড়িগ্রাম, সিরাজগঞ্জ, পাবনা,জামালপুর, শেরপুর সহ দেশের বিভিন্ন জেলে থেকে অসংখ্য ক্ষেত মজুর এই উপজেলায় ধান কাটতে আসতো।কিন্তু প্রাকৃতিক কারণে তাদের দেখা যাচ্ছে না।মিঠামইন উপজেলার কৃষি কর্মকর্তা রাফিউল ইসলাম জানান,এবছর মিঠামইনে ১৫ হাজার ৯ শত ১০ হেক্টর বোরো জমি আবাদ করা হয়েছে এর মধ্যে ৩৯০ হেক্টর ব্রিআর ২৮ বাকি ২৯ সহ ৮৮,৮৯,৯২ ধাণ চাষ করেছে কৃষকরা। তিনি জানান,কৃষকদের অফিস থেকে জমির কোষের সময় কিছু কিছু ঔষধের প্রেসক্রিপসান দেওয়া হয়েছিল।কিন্তু কৃষকরা তা মানেনি।এসকল কারণে ব্লাষ্ট-ছিটা রোগে আক্রান্ত হয়েছে। আমাদের উপসহকারীগণ সার্বক্ষণিক মাঠে কাজ করছেন।অষ্টগ্রাম উপজেলার খয়েরপুর,আবদুল্লাহপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো: আনোয়ার হোসেন খাঁন জানান,এই প্রতিটি হাওরে কি রোগ হয়েছে তিনি জানেন না,তবে ব্রিআর-২৮ জাতের ধান যারা করেছিল তারা একমুঠো ধানও কাটতে পারবে না।
সরজমিনে উপজেলার বড় হাওর,বাঁধাঘাট,খাওরাইলের হাওর,কাস্তুল বাহাদুর পুরের হাওর সহ বিভিন্ন এলাকা ঘরে দেখার সময় কৃষি অফিসের কোনো লোক কে দেখা যায়নি।অষ্টগ্রাম কৃষি অফিসা সূএে জানা যায়,চলতি বছরে অষ্টগ্রাম উপজেলা বোরো আবাদের লক্ষ্য মাএা ধরা হয়েছে ২৪ হাজার ১০০ হেক্টর। আবাদ হয়েছে ২৪ হাজার ১১০ হেক্টর। এ ব্যাপারে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা অভিজিৎ সরকার বলেন,উপসহকারীদের বলা হয়েছে ক্ষতি গ্রস্ত কৃষকদের তালিকা করার জন্য, তবে এখন পর্যন্ত ক্ষতির পরিমাণ নির্ধারণ করতে পারেননি।কেউ যদি মাঠে না থাকে তাদের বিরুদ্ধে ব্যাবস্হা নেওয়া হবে।এব্যাপারে কিশোরগঞ্জের কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মো:আবদুস ছাওার বলেন,ব্রি- ধান ২৮ ও ব্রি- ধান ২৯ কিছু সমস্যা হয়েছে। তিনি বলেন, ইটনা, মিঠামইন ও অষ্টগ্রামে কৃষি কর্মকর্তাদের সাথে এ বিষয়ে কথা বলবেন।
এই সাইটে নিজস্ব সংবাদ প্রকাশের পাশাপাশি বিভিন্ন নিউজ সাইট থেকে সংগ্রহীত খবর সংশ্লিষ্ট সূত্রসহ প্রকাশ করা হয়। কোনো সংবাদ নিয়ে আপত্তি বা অভিযোগ থাকলে, অনুগ্রহ করে সংশ্লিষ্ট নিউজ সাইটের কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করুন।
বিনা অনুমতিতে এই সাইটের প্রকাশিত সংবাদ, আলোকচিত্র, অডিও বা ভিডিও কনটেন্ট ব্যবহার করা আইনত দণ্ডনীয়।