দীর্ঘ বিরতির পর মঞ্চে সেলিম আল দীনের

দীর্ঘ বিরতির পর মঞ্চে সেলিম আল দীনের নিমজ্জন

আসাদুল্লাহ আল গালিব,
নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়

দীর্ঘ বিরতির পর আবারও মঞ্চে প্রয়াত নাট্যাচার্য সেলিম আল দীন রচিত নাটক ‘নিমজ্জন’।ময়মনসিংহের জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ে ২৬ এবং ২৭ মে অনুষ্ঠিত হচ্ছে বাংলা নব্য নাট্যধারার প্রবক্তা সেলিম আল দীন এর গণহত্যা বিষয়ক এই বিখ্যাত নাটক। নাটকটির পরিকল্পনা ও নির্মাণ করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়টির থিয়েটার অ্যান্ড পারফরম্যান্স স্টাডিজ বিভাগের সহকারী অধ্যাপক হীরক মুশফিক। বিভাগেটির ২০১৯-২০২০ শিক্ষাবর্ষের তৃতীয় বর্ষ দ্বিতীয় সেমিস্টার পরীক্ষার প্রযোজনা হিসেবে নির্মাণ করা হচ্ছে নাটকটি।

আজ রোববার(২৬ মে)বিকেল ৫টা এবং সোমবার(২৭ মে)সন্ধ্যা ৭টায় জিয়া হায়দার থিয়েটার ল্যাবে কাব্য-নাটকটি প্রদর্শিত হবে ।

‘নিমজ্জন’ সেলিম আল দীনের নাটক; তবে এ রচনাকে নাটক বা নির্দিষ্ট ‘ফর্ম’-এ অভিহিত করার বিষয়ে সেলিম আল দীন নিজেই সংশয় প্রকাশ করেছেন— “চাকা থেকে অতি সম্প্রতি লেখা উষা উৎসব বা স্বপ্ন রমণীগণ পর্যন্ত পূর্ণাঙ্গ নাট্যরূপে অভিধেয় হওয়ার মতো নয়। আবার সেগুলো নাটক যে নয় তাও নয়।”

এক ধাঁধার সৃষ্টি করে ‘নিমজ্জন’—এখানে স্থানবিহীন এক স্থানের কথা বলা হয়েছে—স্থানের ঐক্য ভেঙে ‘সর্বময়’ করতে চেয়েছিলেন। পাঠক বা দর্শক কেউই বলতে পারবে না স্থানটি ঠিক কোথায়— এটি কি বাংলাদেশ? বুরুন্ডি? নাকি আফগান? মানুষেরও কোনো নাম নেই, কিংবা যেকোনো একটা নাম ধরেই যেন চরিত্র গুলোকে ডাকা যায়, তাতে চরিত্র বা গল্পের কোনো মানহানি হয় না।

বিশ্বময় সংঘটিত গণহত্যার প্রতি ধিক্কার জানিয়ে নাটকটির প্রদর্শনী আয়োজন করা হয়েছে। নাটকের ঘটনা প্রবাহে বিশ্বের বিভিন্ন স্থানে ঘটমান গণহত্যা ও নৃশংসতার প্রত্যক্ষদর্শী আগন্তুক দীর্ঘকাল বিশ্বভ্রমণের পর এক অদ্ভুত শহরে আসেন, পুরোনো বন্ধুর খোঁজে। অধ্যাপক বন্ধু, তার সহকর্মী, কবি এবং ছাত্রের সঙ্গে যখন দেখা হয় তখন শহরে চলতে থাকে একের পর এক নৃশংসতা। নানা ঘাত প্রতিঘাতে নাটকটি এমন এক পরিণতির দিকে এগোই যার মাধ্যমে আহ্বান জানানো হয় সুন্দর এক পৃথিবীর পথে চলার।
নাটকটির নির্দেশক হীরক মুশফিক জানান- ‘দেশ-কাল-পাত্র নির্বিশেষে গণহত্যার প্রাচীন ইতিহাস থেকে বর্তমান অবধি নৃশংসতার যে অবয়ব, তা মানুষের জন্য বিশ্বময় কখনোই কল্যাণকর ছিল না। ‘নিমজ্জন’ তারই এক চাক্ষুষ বয়ান। যতদিন নানান অজুহাতে গণহত্যা চলবে, ততদিন ‘নিমজ্জন’ এর প্রাসঙ্গিকতা বিন্দুমাত্র কমবে না। এমন একটি কঠিন টেক্সট মঞ্চায়নে বিভাগের শিক্ষার্থীরা যে শ্রম দিয়েছে, আশা করি উপস্থাপনায় তার প্রকাশ ঘটবে।’