বাকেরগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান শামসুল আলম চুন্নু আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে যুক্ত হন ১৯৯৫ সালে।একটি বিশেষ মহলের ডোনার হিসেবে বাকেরগঞ্জে তার আবির্ভাব ঘটে।২০০১ সালে তিনি প্রথমবার নৌকার প্রার্থী হয়ে আলোচনায় আসেন।কিন্তু দল তাকে মনোনয়ন না দিয়ে মনোনয়ন দেন সাবেক সংসদ মরহুম আলহাজ্ব সৈয়দ মাসুদ রেজাকে।সেই নির্বাচনে চুন্নু বিদ্রোহী প্রার্থী হন দেয়াল ঘড়ি মার্কা নিয়ে এবং দল থেকে বহিস্কার হন আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী হওয়ার কারণে ।নৌকার প্রার্থী সৈয়দ মাসুদ রেজা বিএনপির প্রার্থী আবুল হোসেন খানের কাছে ৫০০০ ভোটর ব্যাবধানে পরাজিত হন।তারপর থেকেই সে বাকেরগঞ্জের আওয়ামী লীগের তৃণমূলের কাছে মীরজাফর ও বিশ্বাসঘাতক হিসেবে পরিচিতি পান কিন্তু তার সাথে এক বিশেষ মহলের ছত্রছায়ায় থাকায় তিনি পুনরায় রাজনীতির ময়দানে আসেন।২০০৮ এর নির্বাচনে আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনয়ন পান বর্তমান আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা মন্ডলীর সদস্য ও জাতির জনক বঙ্গবন্ধু মেমোরিয়াল ট্রাষ্টের আজীবন সদস্য মেজর জেনারেল অব: আবদুল হাফিজ মল্লিক।সে বছর মহাজোটের কারনে জাতীয় পার্টির মহাসচিব এবিএম রুহুল আমিন হাওলাদারকে আসনটি ছাড় দেয় আওয়ামী লীগ।২০১৪ সালের নির্বাচনে পুনরায় মনোনয়ন চান শামসুল আলম চুন্নু কিন্তু দলীয় মনোনয়ন পান মেজর জেনারেল অব: আবদুল হাফিজ মল্লিক। তিনি মনোনয়ন না পাওয়ায় পৌর মেয়র লোকমান হোসেন ডাকুয়ার সাথে মিলে ষড়যন্ত্র শুরু করেন নৌকার প্রার্থীর বিরুদ্ধে।আওয়ামী লীগের এক শীর্ষ নেতাকে ধরে গোপনে জাতীয় পার্টির রুহুল আমিন হাওলাদারের স্ত্রী লাঙ্গলের প্রার্থী রত্না আমিনের পক্ষ অবলম্বন করেন এবং মহাজোটের প্রার্থী রত্না আমিনকে মনোনয়ন দিতে বাধ্য হয় আওয়ামী লীগ।২০১৮ সালের নির্বাচনে পুনরায় নৌকার মনোনয়ন পান মেজর জেনারেল অব: আবদুল হাফিজ মল্লিক।বাকেরগঞ্জে নিজেদের আধিপত্য ধরে রাখতে পুনরায় লাঙ্গলের প্রার্থী রত্ন আমিনের সাথে হাত মেলান চুন্নু ও লোকমান।জনশ্রতি আছে হেলিকপ্টার যোগে আওয়ামী লীগের এক শীর্ষ নেতার বাসায় গিয়ে ৫ কোটি টাকার বিনিময়ে পুনরায় রত্না আমিনকে মহাজোটের প্রার্থী হবার সকল ব্যাবস্থা করেন।বাকেরগঞ্জে ২০০৮ থেকে ২০২৩ পর্যন্ত চলতে থাকে ফিফটি ফিফটি ভাগের রাজনীতি।যেখানে সারাদেশে চলছে উন্নয়নের মহোৎসব সেখানে বাকেরগঞ্জ চলে লুটপাট আর ভাগ বাটোয়ারার মহোৎসব।টিউবয়েল দেয়ার কথা বলে চুন্নু ও তার লোকজনের বিরুদ্ধে ৪০০ টি পরিবারের কাছ থেকে ৩০০০০ করে টাকা নিয়ে কাউকে টিউবওয়েল না দেয়ার অভিযোগও রয়েছে।এ বছর ২০২৩ সালেও নৌকার প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন পান মেজর জেনারেল অব: হাফিজ মল্লিক।তার পক্ষে বাকেরগঞ্জের ১৪ টি ইউনিয়নেই ইতোমধ্যে গনজোয়াড় শুরু হয়েছে।মিছিল ও পথসভা অব্যাত রয়েছে। মনোনয়ন না পেয়ে পুনরায় স্বতন্ত্র প্রার্থী হন চুন্নু।ঋন খেলাপির কারনে জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মনোনয়ন স্থগিত করলেও পরে নির্বাচন কমিশনে আপিল করে বৈধতা পান তিনি।নিজে দলীয় প্রার্থী না হতে পেরে ভাগ বাটোয়ারার সন্ধি ঠিক রাখতে লাঙ্গলের প্রার্থী রত্না আমিনকে নিয়ে আওয়ামী লীগ ও মহাজোটের শীর্ষ নেতাদের দ্বারে ঘুরে বেড়াচ্ছেন। বাকেরগঞ্জে জনশ্রতি শুরু হয়েছে ২০ কোটি টাকার বিনিময়ে হলেও রত্না আমিনকে মহাজোটের প্রার্থী কনফর্ম করার ব্যাবস্থা করবেন।ইতোমধ্যে বাকেরগঞ্জের বিভিন্ন ইউনিয়নে রত্না আমিনের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ ও ঝাড়ু মিছিল হয়েছে।বাকেরগঞ্জ আওয়ামী লীগের বিশফোড়া হিসেবে পরিচিত স্বতন্ত্র প্রার্থী চুন্নুর বহিষ্কার চায় স্থানীয় আওয়ামী লীগ ও তার অঙ্গসংগঠন।(চলবে)