১০ ডিসেম্বর ২০২৩ , ১:৩১:৫১ প্রিন্ট সংস্করণ
০৯/১২/২০২৩
পাগলা মসজিদের ৯ সিন্দুকে মিলল ২৩ বস্তা টাকা ।
বিজয় কর রতন, ষ্টাফ রিপোর্টার কিশোরগঞ্জঃ- কিশোরগঞ্জ শহরের আলোচিত পাগলা মসজিদের ৯টি দানবাক্স শনিবার সকাল পৌনে ৮টায় খোলা হয়েছে। অন্যান্য সময় দানবাক্সগুলো তিন মাস পর পর খোলা হলেও, এবার সংসদ নির্বাচন প্রস্তুতিসহ নানা কারণে খোলা হয়েছে তিন মাস ২০ দিন পর। অন্যদিকে দানের পরিমাণ বেড়ে যাওয়ায় এবার সিন্দুকও একটি বাড়ানো হয়েছে। তারপরও প্রতিটি সিন্দুক ছিল টাকায় ঠাসা। মসজিদ কমিটির সভাপতি জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আবুল কালাম আজাদ, পুলিশ সুপার মোহাম্মদ রাসেল শেখ ও অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট কাজী মহুয়া মমতাজের উপস্থিতিতে সিন্দুকগুলো খোলা হয়। এরপর মসজিদের দোতলার ফ্লোরে টাকা ঢেলে চলছে গণনা কাজ। মসজিদটির কমিটি সূত্রে জানা যায়, মসজিদ কমপ্লেক্স মাদরাসার প্রায় ১৩৪ জন ছাত্র, ১০ জন শিক্ষক ও রূপালী ব্যাংকের ৬০ জন স্টাফ গণনায় অংশ নিয়েছেন। দেশি মুদ্রার পাশাপাশি সিন্দুকে বিদেশি মুদ্রাও পাওয়া গেছে। এ কাজ তদারকি করছেন ৫ জন ম্যাজিস্ট্রেটসহ মসজিদ কমিটির অন্যান্য সদস্যরা। মোতায়েন রয়েছে পর্যাপ্ত পুলিশ ও আনসার সদস্য। অন্যান্যবারের মতো দেশি-বিদেশি মুদ্রার পাশাপাশি এবারও পাওয়া গেছে বেশ কিছু সোনা-রুপার অলঙ্কার। ফ্লোরে ঢেলে টাকাগুলো মান অনুযায়ী আলাদা বান্ডিলে বাঁধা হচ্ছে। গণনা শেষে টাকাগুলো রূপালী ব্যাংকে মসজিদের হিসাবে জমা করা হবে। এর আগেরবার ১৯ আগস্ট ৮টি দানবাক্সে পাওয়া গিয়েছিল ৫ কোটি ৭৮ লাখ ৯ হাজার, ৩২৫ টাকা।এই পগলা মসজিদের প্রচার দিন দিনই চারিদিকে ছড়িয়ে পড়ছে। আর নানা ধর্মের, নানা শ্রেণির, নানা বয়সের মানুষ এখানে এসে সিন্দুকে টাকা ফেলে যান। অনেকে মানি অর্ডারের মাধ্যমেও টাকা পাঠান। এছাড়া অনেকে গবাদি পশু আর হাসঁ মুরগিও দান করে থাকেন। সেগুলো প্রকাশ্য ডাকের মাধ্যমে বিক্রি করে টাকা ব্যাংকে জমা করা হয়। কেউ পরকালে নাজাতের আশায়, কেউ রোগমুক্তি, কেউ পরীক্ষার ভাল ফল, কেউ সন্তানের আশায়, কেউ পারিবারিক শান্তির আশায়, কেউ রাজনৈতিকভাবে প্রতিষ্ঠার আশায় এখানে দান করে থাকেন। সিন্দুকে অনেক চিঠি আর চিরকুটও পাওয়া যায়। তাতে এসব মনের আশা লেখা থাকে। কথিত আছে, জেলা শহরের পশ্চিম প্রান্তে নরসুন্দা নদীর তীরে প্রায় পৌনে দুইশ বছর আগে প্রতিষ্ঠিত হয় এই পাগলা মসজিদ। মসজিদের প্রশাসনিক কর্মকর্তা বীর মুক্তিযোদ্ধা শওকত উদ্দিন ভূঁইয়া জানিয়েছেন, কিছু দালিলিক সূত্রে জানা গেছে, শহরের হয়বতনগরের জমিদার জিলকদর দাদ খান প্রায় পৌনে দুইশ বছর আগে এই জায়গায় নরসুন্দা নদীর পাড়ে নামাজ আদায় করতেন। এক পর্যায়ে একটি ছোট্ট মসজিদ তৈরি করে তাতে নামাজ আদায় শুরু করেন। তাঁকে সবাই পাগলা জমিদার বলে ডাকতেন। তাঁর নামানুসারেই মসজিদটির নামকরণ হয়ে যায় ‘পাগলা মসজিদ’। তবে মসজিদের কোথাও এর প্রতিষ্ঠাকালের সন-তারিখ লেখা পাওয়া যায়নি।
বিজয় কর রতন
দৈনিক সমকাল
মিঠামইন কিশোরগঞ্জ
মোবাইল:০১৭২৪৩৬২৭৪৪