৫ এপ্রিল ২০২৩ , ৩:২৮:৫২ প্রিন্ট সংস্করণ
মুকুল বোস বোয়ালমারী প্রতিনিধি :
ফরিদপুরের বোয়ালমারী উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা (টিএইচও) ডা. এম এ নাহিদ আল রাকিব সরকারি গাড়ির অপব্যবহার ও উপজেলার বাইরে যাওয়ার সময় বিনা অনুমতিতে ব্যবহার করছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এতে একদিকে যেমন জ্বালানি তেল বেশি যাচ্ছে সরকারি কোষাগার থেকে, তেমনি ভাবমূর্তি নষ্ট হচ্ছে স্বাস্থ্য বিভাগের। অনুসন্ধানে জানা যায়, চলতি বছরের ১২ জানুয়ারি ডা. এম এ নাহিদ আল রাকিব ফরিদপুরে বোয়ালমারী উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা (টিএইচও) হিসেবে যোগদান করেন। পূর্ববর্তী টিএইচও-এর আমলে প্রাপ্ত সরকারি কাজে ব্যবহারের জন্য কালো রঙের উন্নতমানের গাড়িটি তিনি ব্যবহারের জন্য পান। নিয়ম রয়েছে সরকারি কাজ ছাড়া উপজেলার বাইরে গাড়ি নিয়ে যেতে হলে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের অনুমতি ও সংশ্লিষ্ট কারণ থাকতে হবে। অথচ ডা. এম এ নাহিদ আল রাকিব প্রতিনিয়ত সরকারি গাড়িটি ব্যবহার করে বোয়ালমারী উপজেলার বাইরে যাচ্ছেন। এমনকি তিনি ঢাকা গেলেও যথাযথ কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়াই সরকারি গাড়িটি নিয়ে যাচ্ছেন। যোগদানের পর থেকেই তিনি বিভিন্ন অজুহাতে সরকারি গাড়িটি নিয়ে তিনি উপজেলার বাইরে যাচ্ছেন। সর্বশেষ গত ৩১ মার্চ সেহেরি খেয়ে তিনি সরকারি গাড়িটি নিয়ে ঢাকা গিয়েছেন। ২ থেকে ৬ এপ্রিল পর্যন্ত পাঁচদিন ব্যাপী তার ঢাকায় ‘Training on public financial procurement management in health sector’ বিষয়ক প্রশিক্ষণ চলছে। ওই প্রশিক্ষণে অংশগ্রহণের জন্য তিনি সরকারি গাড়ি নিয়ে দুইদিন আগেই কর্মস্থল ত্যাগ করেন। বোয়ালমারী থেকে পদ্মাসেতু হয়ে ঢাকার দূরত্ব প্রায় ১২৫ কিলোমিটার। সরকারি কাজের অজুহাতে ঢাকায় যাওয়ার নামে বিভিন্ন সময় তিনি সরকারি গাড়ি ব্যবহার করে ব্যক্তিগত সফরও করেন বলে অভিযোগ উঠেছে। এতে জ্বালানি তেল বাবদ সরকারি অর্থের অপচয় হচ্ছে। অপরদিকে বদনাম হচ্ছে স্বাস্থ্য বিভাগের। নাম না প্রকাশ করার শর্তে বেশ কয়েকজন প্রত্যক্ষদর্শী জানান, বোয়ালমারী উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা (টিএইচও) বিভিন্ন স্থানে ব্যক্তিগত প্রয়োজনে যাওয়ার ক্ষেত্রেও ব্যবহার করেন সরকারি গাড়ি। এ ব্যাপারে সরকারের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের ব্যবস্থা নেওয়া উচিত।
অভিযোগের ব্যাপারে জানতে চাইলে টিএইচও ডা. এম এ নাহিদ আল রাকিব প্রথমে মুঠোফোনে বলেন, ‘আমার হোয়াটসঅ্যাপে যোগাযোগ করেন। পরে হোয়াটসঅ্যাপে যোগাযোগ করা হলে এ বিষয়ে কোন মন্তব্য করা থেকে তিনি বিরত থাকেন। ২ থেকে ৬ এপ্রিল প্রশিক্ষণে অংশগ্রহণের জন্য সরকারি গাড়ি নিয়ে ঢাকায় যাওয়ার বিষয়ে ফরিদপুরের সিভিল সার্জন মো. সিদ্দিক রহমান মুঠোফোনে বলেন, ‘সরকারি কাজে উপজেলার বাইরে গেলে সরকারি গাড়ি নিয়ে যাওয়ার বিধান আছে। তবে সিভিল সার্জন এবং ঢাকায় ডিজিতে বিষয়টি লিখিতভাবে জানিয়ে অনুমতি নিতে হবে। বোয়ালমারী টিএইচও সরকারি কাজে গাড়ি নিয়ে ঢাকা গেছেন, এ বিষয়টি আমার জানা নেই। আমি এ বিষয়ে খোঁজ নিচ্ছি। আপনি ১০ মিনিট পরে আমাকে ফোন দেন।’ পরবর্তীতে সিভিল সার্জনকে ফোন দিলে তিনি বলেন, ‘আমার সাথে টিএইচও-র কথা হয়েছে। আমি তাকে ফোন দিয়েছিলাম। তিনি সরকারি কাজেই ঢাকা গিয়েছেন। তবে সরকারি গাড়ি ব্যবহার করে ঢাকা যাওয়ার বিষয়ে আমাকে লিখিতভাবে জানাননি।