অপরাধ

ভুয়া ডাক্তার জোহরা আক্তারের ডায়গনস্টিক সেন্টার সীলগালা

ডেস্ক রিপোর্ট

৫ এপ্রিল ২০২৩ , ৩:১৯:২৮ প্রিন্ট সংস্করণ

 

ইয়াছিন আরাফাত, কুমিল্লা

নামের পাশে ডাক্তার লিখে নিজেকে একজন গাইনি বিশেষজ্ঞ প্রচার করা সনদহীন ডাক্তার জোহরা আক্তারের ৭ম তলা ভবনে থাকা লাইসেন্স বিহীন ডায়গনস্টিক সেন্টার সীলগালা করা হয়েছে।

সোমবার (৩ এপ্রিল) দুপুরে জেলা সিভিল সার্জন কার্যালয়ের নির্দেশে ‘মা-মনি ডায়গনস্টিক সেন্টার’ নামে জোহরা আক্তারের ওই চেম্বারটি বন্ধ করে দেবিদ্বার উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা।

দীর্ঘ প্রায় ১৬ বছর যাবৎ ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক সংলগ্ন চান্দিনা-বাগুর বাস স্টেশন এলাকায় কোন প্রকার সনদ ছাড়াই চিকিৎসা সেবা দিয়ে আসছিলেন নাম সর্বস্ব ‘ডাক্তার জোহরা আক্তার’। অবৈধ আয়ে গড়ে তুলেছেন ৭ম তলা ভবন। আর ওই ভবনের নিচেই লাইসেন্স বিহীন ডায়গনস্টিক সেন্টার ও ফার্সেমী পরিচালনা করে আসছিলেন তিনি।

দেবিদ্বার উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. নাজমূল আলম জানান, বিষয়টি জানার পর জেলা সিভিল সার্জনের নির্দেশে সোমবার অভিযান পরিচালনা করে লাইসেন্স বিহীন ওই ডায়গনস্টিক সেন্টার বন্ধ করে দেই। এসময় অভিযান পরিচালনা করে জোহরা আক্তারকে খুঁজে পাইনি। এমন ভুয়া চিকিৎসক নামধারীদের বিরুদ্ধে আমাদের অভিযান অব্যাহত থাকবে।

প্রসঙ্গত, গত শনিবার (১ এপ্রিল) ‘নামই তার ডাক্তার, সনদ ছাড়াই বিশেষজ্ঞ গাইনি চিকিৎসক পরিচয়ে দুই যুগ পার!’ শিরোনামে বিভিন্ন পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশের পর বিষয়টি নজরে আসে প্রশাসনের।

জানা যায়, প্রাইভেট হাসপাতালে সেবিকা হিসেবে ১৯৯৯ সাল থেকে কর্মজীবন শুরু করেন কুমিল্লার বরুড়া উপজেলার বাসিন্দা জোহরা আক্তার। ২০০২ সাল থেকে নিজেকে এমবিবিএস (গাইনি) চিকিৎসক দাবী করে শুরু করেন চিকিৎসা সেবা। কুমিল্লার চান্দিনা উপজেলা সদরের ‘জননী হাসপাতাল প্রা. লি.’ নামে একটি বেসরকারি হাসপাতালে ২০০৩ সাল থেকে ২০০৭ সাল পর্যন্ত প্রায় ৪ বছর গাইনি রোগীদের সেবা দেওয়ার পর জেলা সিভিল সার্জন কার্যালয়ের ভিজিটে ধরা পরেন তিনি। ২০০৮ সালে ছবিসহ জাতীয় পরিচয়পত্র প্রস্তুতকালে তিনি এনআইডি কার্ডে কৌশলে নিজের নাম দিয়েছেন ‘ডা. জোহরা আক্তার’। এনআইডি কার্ডে নিজের স্বাক্ষরও দিয়েছেন ‘ডা. জোহরা আক্তার’ লিখে। প্রশাসন বা সচেতন মহলের চোখ ফাঁকি দিতে ডাক্তার পরিচয় প্রদানে ওই অভিনব কৌশল তার।

পরবর্তীতে চান্দিনা ও দেবিদ্বার উপজেলার সীমান্তবর্তী চান্দিনা-বাগুর বাস স্টেশন এলাকার একটি ওষুধ দোকানে রোগী দেখা শুরু করেন জোহরা আক্তার। সেখানে সকাল-বিকাল রোগী দেখার পাশাপাশি সুবিধাজনক স্থানে জায়গা কিনে অনুমতি ছাড়াই গড়ে তুলেছেন ডায়াগনস্টিক সেন্টার। মাত্র কয়েক বছরের ব্যবধানে সেখানে গড়ে তুলেছেন ৭ম তলা ভবন। আর ওই ভবনের নামও দিয়েছেন ‘ডা. জোহরা আক্তার কমপ্লেক্স’। নামের পাশে ডাক্তার লিখে রোগী দেখার অপরাধে প্রশাসন কয়েকবার তাকে আটক করে তার ডায়াগনস্টিক সেন্টার বন্ধ করে দেওয়ায় এখন কৌশল পরিবর্তন করেন তিনি। ডায়গনস্টিক সেন্টারের নামের নিচে বড় অক্ষরে নিজের নাম ‘ডা. জোহরা আক্তার কমপ্লেক্স’ প্রেসক্রিপশন প্যাড তৈরি করে সেই প্যাডে রোগীর চিকিৎসাপত্র লিখেন তিনি। দুই যুগ এমন চিকিৎসা সেবা প্রদান করে রোগীদের কাছ থেকে হাতিয়ে নিয়েছেন কোটি কোটি টাকা।

শেয়ার করুন:

আরও খবর

Sponsered content