বাগেরহাট জেলা প্রতিনিধি: সৌরভ কুমার
বাগেরহাটের ৮ নং খানপুর ইউনিয়নে সাত নম্বর ওয়ার্ডের দক্ষিন খানপুর, গ্রামের মৃত্যু দস্তান খানের বড় ছেলে রাজ্জাক খান(৫৩),পেশাই ছিলেন একজন রাজমিস্ত্রি। প্রায় সাত বছর আগে বাড়ির সামনের নারকেল গাছ থেকে পড়ে যায় ইটের রাস্তার পরে ,ভেঙে যায় মেরুদন্ডের হাড়। তখন থেকে হারিয়ে ফেলে উঠে দাঁড়ানোর শক্তি।পরিবারের হাল ধরেন স্ত্রী নামজুন নাহার বেগম, পরের বাসায় কাজ করে স্বামীর ওষুধ খরচ ও পরিবারের খরচ বহন করতেন, বিয়েও দিয়েছেন এক মেয়েকে, লেখাপড়া শিখাতে চান একমাত্র ছেলে সামিউলকে।
রাজ্জাক খান বলেন আমি বাবা হিসাবে ব্যার্থ, নিজেকে খুব অসহায় মনে হয়, পরিবারের দুরবস্থা শুধু চেয়ে পড়ে দেখতে হয়। উপরওয়ালা সাত বছর আগে আমাগো পরিবার থেকে সুখ শান্তি উঠিয়ে নিচে।
নামাজ পড়ে আল্লাহার কাছে বলি আমারে একটু মাপ করে দাও।
এই পৃথিবীতে পুরুষ হিসেবে বেঁচে থাকা সত্ত্বেও পরিবারের দুরবস্থা আর সহ্য করতে পারতেছি না।আজ যে সংসার দেখার কথা ছিল আমার সে সংসার দেখতেছি আমার স্ত্রী। আমার পরিবারের সব খরচ বহন করে আমার স্ত্রী, পরের বাড়ি কাজ করে। আমি সরকার থেকে সুযোগ-সুবিধা বলতে দুই বছর আগে পেয়েছে একটি পঙ্গু ভাতার কার্ড, কিন্তু বছরের চারবার টাকা পাওয়ার কথা থাকলেও পাই তিন বার। তা দিয়ে আমার ঊষুধ ও হয় না। আর ছেলের লেখা পড়া ও আবদার পূরণ করব কিভাবে।
স্ত্রী নামজুন নাহার বেগম, বলেন পরের বাড়ি কাজ করে চলতে জীবন, জিনিস প্রত্রের দাম যে ভাবে বাড়েছে, তাতে করে আমাদের বাচা মুশকিল। ছেলেটা ক্লাস সিক্সে পড়ে এখনো পর্যন্ত বই কিনে দিতে পারিনি , প্রতি মাসের স্বামীর ওষুধ লাগে তিন হাজার টাকার খেয়ে না খেয়ে দিন যায় আমাগো। ছয় সাত বছর ঈদে কোন নতুন জামা কাপড় পরি না ছেলেটা বায়না করে কান্না করে তখন কলিজা ফাইটা যায়। এমন বিপদ যেন আল্লাহ আমাদের শত্রুরে ও না দেই।
ছেলে সামিউল খান বলেন,আমার আব্বু গাছ থেকে পড়ে পঙ্গু হয়ে গেছে, আমি ঠিকমত লেখাপড়া করতে পারি না, আম্মুর কাছে যা চাই তাই পাই না, আমার সহপাঠীদের মতন চলতে পারিনা, সামনে ঈদ হয়তো নতুন পোশাক ও পাবনা, পুরন পোশাক পড়েই বাকি ঈদ গুলো কাটছে আমার।
রাজ্জাকের এর ছোট ভাই মাজেদ খান আমার ভাই আজ সাত বছর বিছানায় পড়ে আছে।সরকারের কাছে একটা আবেদন যেন আমার ভাইডা যে একটু সুস্থ হওয়ার চিকিৎসা দবি কর,ছি। আর আমার ভাইপোটার যেন একটু সুন্দর ভাবে লেখাপড়া করতে পারে লেখাপড়া করার জন্য যে সহযোগিতা প্রয়োজন এমন সহযোগিতা যেন সরকার অথবা অন্য কোন প্রভাবশালীরা করেন।
আবু সাইদ তরফদার বলেন, প্রতিবাশী, রাজ্জাক ভাই খুবই ভালো লোক দীর্ঘ সাত বছর আট বছরের মতন বিছানায় পড়ে আছে। দেখার মতো কেউ নেই। ওই ছেলেটা লেখাপড়া করে আমার ছেলের বই নিয়ে খুবই অসহায় ওরা। আপনার যদি ওদের একটু সহযোগিতা করতে পারেন খুবই ভালো হতো ওদের
৮ নং খানপুর ইউনিয়ন পরিষদের ৭নং সদস্য কামাল তরফদার বলেন,তাকে যে উন্নত মানের চিকিৎসা দিলে হয়তো কিছু দিন ভালো ভাবে জীবনযাপন করতে পারতো কিন্তু তা ও আমরা দিতে পারিনি। তাকে ৩০ কেজি চালের কার্ডও পঙ্গুতা ভাতা দিয়েছি, ইউনিয়ন পরিষদ থেকে যদি কোন সুযোগ-সুবিধা আসে তাহলে আমরা অবশ্যই তাকে দিব আর তার ছেলের লেখাপড়ার খরচ বিষয়টা আমাদের মাথায় আছে।
এই সাইটে নিজস্ব সংবাদ প্রকাশের পাশাপাশি বিভিন্ন নিউজ সাইট থেকে সংগ্রহীত খবর সংশ্লিষ্ট সূত্রসহ প্রকাশ করা হয়। কোনো সংবাদ নিয়ে আপত্তি বা অভিযোগ থাকলে, অনুগ্রহ করে সংশ্লিষ্ট নিউজ সাইটের কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করুন।
বিনা অনুমতিতে এই সাইটের প্রকাশিত সংবাদ, আলোকচিত্র, অডিও বা ভিডিও কনটেন্ট ব্যবহার করা আইনত দণ্ডনীয়।