২১ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ , ৯:২০:২২ প্রিন্ট সংস্করণ
ওবায়দুর রহমান, পবিপ্রবি ও দুমকি পটুয়াখালী প্রতিনিধিঃ পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে(পবিপ্রবি) অমর একুশে ফেব্রুয়ারি ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উদযাপন করতে গিয়ে দিনের আলোয় জুতা পায়ে দিয়ে প্রভাতফেরির নামে ভাষাশহীদদের অশ্রদ্ধা ও অবমাননার অভিযোগ উঠেছে কয়েকজন শিক্ষক -কর্মকর্তার বিরুদ্ধে।
এ ঘটনায় সুশীল সমাজের লোকজনসহ সাধারণ শিক্ষার্থীরা ক্ষোভ ও অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন।
২১ শে ফেব্রুয়ারী (মঙ্গলবার) সকাল ৭ টায় অনুষ্ঠিত প্রভাতফেরীতে ভাইস-চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. স্বদেশ চন্দ্র সামন্ত খালি পায়ে থাকলেও একাধিক শিক্ষক ও কর্মকর্তাকে জুতা পায়ে দিয়ে এতে অংশগ্রহণ করতে দেখা গেছে। এদের মধ্যে মৃত্তিকা বিজ্ঞান বিভাগের প্রফেসর ড. ফজলুল হক, পরিবেশ বিজ্ঞান ও দূর্যোগ ব্যবস্থাপনা অনুষদের সহকারী রেজিস্ট্রার মোঃ মনিরুজ্জামান, শের-ই-বাংলা হল-২ এর সেকশন অফিসার আব্দুস সালাম, শিক্ষা ও বৃত্তি শাখার ডেপুটি রেজিস্ট্রার মোঃ আতাউর রহমানকে প্রথম সারিতে জুতা পায়ে দিয়ে প্রভাতফেরীতে অংশগ্রহণ করতে দেখা গেছে।
একুশে ফেব্রুয়ারি ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে বিশ্ববিদ্যালয় জাতীয় দিবস উদযাপন কমিটি মঙ্গলবার শহীদ মিনারে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ, জাতীয় পতাকা অর্ধনমিতকরণ ও কালো পতাকা উত্তোলন, প্রভাতফেরি, কালো ব্যাজ ধারণ ও আলোচনা সভার আয়োজন করে। ২১শে ফেব্রুয়ারীর প্রথম প্রহরে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণের সময় সঞ্চালক একাধিকবার খালি পায়ে প্রভাতফেরীতে অংশগ্রহণ করার অনুরোধ করলেও বেশ কয়েকজনের জুতা পায়ে অংশগ্রহণকে প্রশ্নবিদ্ধ করছেন সংশ্লিষ্টরা।
একাধিক শিক্ষার্থী অভিযোগ করে জানিয়েছেন, শিক্ষকের মতো দায়িত্বশীল জায়গায় থেকে জাতীয় দিবসে যদি এ ধরণের কর্মকান্ড ঘটে তবে তাদের থেকে জাতি কি শিখবে?
নাম প্রকাশ না করার শর্তে বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন শিক্ষক জানান, আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসে এ ধরণের অবমাননা শুরু থেকেই হয়ে আসছে। ভাষা শহীদদের প্রতি শিক্ষকের মতো দায়িত্বশীল জায়গায় থেকে এরকম কর্মকান্ড কখনোই কাম্য নয়।
প্রফেসর ড. ফজলুল হককে এ বিষয়ে জিজ্ঞেস করা হলে তিনি বলেন, আমি অনেক আগে থেকেই কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে গিয়ে ভাষা শহীদের স্বরণ করে আসছি। তবে আজ যেটা হয়েছে সেটা একদমই ঠিক হয়নি।
সেকশন অফিসার আব্দুস সালাম অভিযোগ স্বীকার করে বলেন, এটা আমার জন্য অনেক বড় একটি অন্যায় হয়েছে, কোন ভাবেই জুতা পায়ে দিয়ে এ শ্রদ্ধা নিবেদন অনুষ্ঠানে যাওয়া উচিত হয়নি ভবিষ্যতে এ বিষয়টির ব্যাপারে সতর্ক থাকবো।
এ বিষয়ে যোগাযোগ করা হলে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস-চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. স্বদেশ চন্দ্র সামন্ত বলেন, এ বিষয়টি নিয়ে এর আগেও বিভিন্ন জায়গায় কথা বলেছি। অনেকে এমন একটি জাতীয় বিষয়ের গুরুত্ব অনুধাবন করতে পারেন না বলেই এ ঘটনা ঘটেছে। যদিও অনেক বয়োজ্যেষ্ঠ শিক্ষকদের বিভিন্ন শারীরিক জটিলতা রয়েছে, কিন্তু শহীদদের স্বরণে এমন একটি আয়োজনে সকলেরই সতর্ক থাকা উচিত।