দেশজুড়ে

বরিশাল নগরীতে পিস হিসেবে বিক্রি হচ্ছে মুরগির মাংস

 

পলাশ চন্দ্র দাসঃ

বরিশাল নগরীতে এক মাসের ব্যবধানে বয়লার মুরগির দাম কেজিপ্রতি ১০০ টাকা বেড়েছে। পাশাপাশি সোনালি, লেয়ারসহ দেশি মুরগির দামও আকাশচুম্বি হওয়ায় এক শ্রেণির মানুষের পক্ষে ক্রয় করা সম্ভবপর হচ্ছে না। হঠাৎ করে মূল্যবৃদ্ধির কারণে নিম্নবিত্ত এবং মধ্যবিত্ত মানুষের ক্রয় ক্ষমতার বাইরে চলে যাওয়ায় অনেকেই বয়লার মুরগি থেকে মুখ ফিরিয়ে নেওয়ায় দোকানিদের বিক্রি কমে গেছে। তাই বরিশাল নগরীর অধিকাংশ দোকানি মুরগির মাংস পিস হিসেবে বিক্রির সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। বিশেষ করে সব শ্রেণির মানুষ যাতে করে কমবেশি মুরগির মাংস ক্রয় করতে পারেন এবং বিক্রি বাড়াতে এমন উদ্যোগ নিতে যাচ্ছেন দোকানিরা। রবিবার নগরীর বাজার রোড এবং পোর্টরোডের পিস হিসেবে মাংস কিনছেন ক্রেতারা। রবিবার বাজার ঘুরে দোকানিদের সাথে কথা বলে এমন তথ্য পাওয়া গেছে।

বরিশাল নগরীর বাজাররোড দোকানিরা জানিয়েছেন, দুই মাস আগেও বয়লার মুরগির প্রতিকেজি বিক্রি হয়েছে ১৪০ থেকে ১৫০ টাকায়। সেই মুরগির রেকর্ড দাম বেড়ে বর্তমানে বিক্রি হচ্ছে ২৫০ থেকে ২৬০ টাকায়। সোনালি মুরগির দামও কেজি ৩৩০ টাকা থেকে বেড়ে ৩৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে,একই সঙ্গে বাড়তি দামে বিক্রি হচ্ছে দেশি মুরগিও। বিক্রেতাদের কাছ থেকে জানাগেছে এর আগে কখনোই তাঁরা ২৬০টাকা কেজিতে বয়লার মুরগি বিক্রি করেননি। মূলত বাজারে বয়লার মুরগির সরবরাহ কমে যাওয়ায় এই রেকর্ড দাম সৃষ্টি হয়েছে।

ব্যবসায়ীরা জানান, সাত দিনের ব্যবধানে মুরগির দাম আরেক দফা বাড়ল। সাত দিন আগে বয়লার মুরগির কেজি বিক্রি হয়েছে ২০০ টাকা। নতুন করে আরেক দফা দাম বেড়ে এখন বিক্রি হচ্ছে ২৬০থেকে ২৭৫ টাকা কেজি। সাত দিন আগে সোনালি মুরগির কেজি বিক্রি হয়েছে ২৯০টাকায়। শনিবার তা বিক্রি হয়েছে ৩৩০ টাকা থেকে ৩৪০ টাকায়। দেশি মুরগির দাম কেজিতে ৪০ টাকা বেড়ে বর্তমানে বিক্রি হচ্ছে গরুর মাংসের দামে ৫৭০টাকায়। তবে বাজারে ডিমের দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। ফার্মের ডিমের ডজন বিক্রি হচ্ছে ১৩৫ থেকে ১৪০ টাকা। মুরগি কিনতে আশা ক্রেতা রুবেল জানান, দেশি, লেয়ার, কক, এক শ্রেণির মানুষের ক্রয় সীমার বাইরে অনেক আগেই চলে গেছে। গত কয়েকদিনে মূল্যবৃদ্ধির কারণে এখন বয়লার মুরগি থেকেও মানুষ মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে, বর্তমানে ২৬০ থেকে ২৭০ টাকায় বিক্রি হওয়ায় অনেকের ইচ্ছা থাকা সত্বেও এই মুরগি ক্রয় করতে পারছে না। আরেক দোকানি রতন জানান, গত দুই মাসে বয়লার মুরগির মূল্যবৃদ্ধি পেয়েছে কেজিপ্রতি ১০০ টাকা। এখনও প্রতিনিয়ত মূল্যবৃদ্ধি পাচ্ছে, আসছে রমজানে আরও বাড়ার সম্ভবনা রয়েছে। ফলশ্রুতিতে সপ্তাহখানেক ধরে বয়লার মুরগি বেচা-বিক্রি কমে যাওয়ায় তাই বাধ্য হয়ে বিক্রি ধরে রাখতে এবং সব শ্রেণির মানুষকে মুরগির মাংসের স্বাদ দিতে পিস হিসেবে বিক্রির সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। মুরগির দাম বাড়ার কারণ হিসেবে ব্যবসায়ীরা বলছেন, পোলট্রি খাদ্য, বাচ্চা, ওষুধের দাম অস্বাভাবিক বেড়ে যাওয়ায় ব্রয়লার মুরগির দামও বেড়েছে। এসব কারণে খামারিরা বর্তমানে শেডে মুরগির বাচ্চা তুলছেন না। খামারিরা বলছেন, যে টাকা তাঁরা খামারে মুরগির পেছনে ব্যয় করবেন, বাজার পড়তির দিকে গেলে সেই টাকা আর উঠে আসবে না। যে কারণে বাজারে বয়লার মুরগির এক ধরনের সংকট তৈরি হয়ে দাম বেড়েছে।

বাজার রোডের একাধিক দোকানি বলেন, ‘বয়লার মুরগির দাম আরেক দফা বাড়ল। দাম বাড়ার কারণে শুক্রবার বয়লার মুরগির কেজি বিক্রি করছি ২৫০টাকা সোহরাব নামের এক মুরগি ব্যবসাইক বলেন,বাজারে মুরগির সরবরাহ কম। আর পোলট্রি খাদ্যের দাম অনেক বেড়ে যাওয়ায় অনেক খামারি মুরগি তোলেননি।এর প্রভাব পড়েছে বাজারে। ইতিহাসের সর্বোচ্চ দামে এখন বয়লার মুরগি বিক্রি করতে হচ্ছে। তবে বেশি দামে বিক্রি করেও আমরা কিন্তু লাভ করতে পারছি না। ক্রেতা ধরে রাখতেই বয়লার মুরগির মাংস পিস হিসেবে বিক্রির সিদ্ধান্ত নিয়েছি দোকানিরা। বয়লার ২৬০ টাকায় সোনালি মুরগি কেজি ৩৩০ থেকে ৩৪০ টাকা, আর দেশি মুরগি ৫৬০ টাকা কেজি।

শেয়ার করুন:

আরও খবর

Sponsered content