সৈয়দ হেলাল আহমদ বাদশা গোয়াইনঘাট
বৃহত্তর জৈন্তিয়ার বীর বাহাদুর, সর্বস্তরের গনমানুষের হৃদয়ের রাজা বৃহত্তর জৈন্তার প্রাণপুরুষ জৈন্তিয়া কেন্দ্রীয় ছাত্র পরিষদের প্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান পৃষ্ঠপোষক ও বৃহত্তর জৈন্তার কৃতি সন্তান কোম্পানীগঞ্জ ছাত্র পরিষদের প্রতিষ্ঠাতা ও কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান এম তৈয়বুর রহমানের আজ শুক্রবার ১০ম মৃত্যুবার্ষিকী। ২০১৩ সালের এই দিনে মাত্র ৫৫ বছর বয়সে লিভার সিরোসিসে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন কোম্পানীগঞ্জের দাবী-দাওয়া আদায়ের বলিষ্ট পুরুষ এম তৈয়বুর রহমান।
এম তৈয়বুর রহমান উপজেলার পূর্ণাছগাম গ্রামের মরহুম হাজী কলিম উল্ল্যাহর কনিষ্ট পুত্র। তিনি ১৯৮৩ সালে প্রথম রণিখাই ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। পরপর তিনি ১৫ বছর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ছিলেন। তিনি ১৯৯০ সালে প্রথম কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। ২০০৯ সালের ২২ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত উপজেলা নির্বাচনে তিনি দ্বিতীয়বারের মতো চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। মৃত্যুর আগ পর্যন্ত তিনি উপজেলা চেয়ারম্যানের দায়িত্বে ছিলেন।
জনপ্রতিনিধিত্ব ছাড়াও এম তৈয়বুর রহমান বিভিন্ন সামাজিক ও রাজনৈতিক সংগঠনের সাথে সম্পৃক্ত ছিলেন। জৈন্তিয়া কেন্দ্রীয় ছাত্র পরিষদ গঠনের ক্ষেত্রেও তাঁর ভূমিকা ছিল অনন্য । তিনি কোম্পানীগঞ্জ ছাত্র পরিষদের(কোছাপ)’র প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন। পিয়াইন নদী খনন প্রকল্পের বলিষ্ঠ কণ্ঠস্বর।
এছাড়াও অনেক সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠন প্রতিষ্ঠায় তার ভূমিকা ছিল। মুক্তিযুদ্ধের সর্বাধিনায়ক বঙ্গবীর জেনারেল এম এ জি ওসমানীর সাথেও তাঁর সখ্যতা ছিল। তিনি আওয়ামী লীগের রাজনীতিতেও সক্রিয় ছিলেন।
এম তৈয়বুর রহমান কোম্পানীগঞ্জের হুমায়ুন রশীদ চৌধুরী উচ্চ বিদ্যালয়, পূর্ণাছগাম উচ্চ বিদ্যালয় ও কোম্পানীগঞ্জ বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়সহ অনেক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রেও অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছেন। তিনি ১৯৫৮ সালের পহেলা জানুয়ারি জন্মগ্রহণ করেন।
এদিকে, এম তৈয়বুর রহমানের ১০ম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে আজ শুক্রবার বাদ জুম্মা দক্ষিণ রণিখাইয়ের খাগাইল মাদ্রাসায় দোয়া মাহফিলের আয়োজন করেছে কোম্পানীগঞ্জ ছাত্র পরিষদ। সংগঠনটির সভাপতি হেলাল আহমদ ও সাধারণ সম্পাদক মো: মারজান উদ্দিন ছাত্র পরিষদের সকল নেতৃবৃন্দ সহ সবার উপস্থিতি কামনা করেছেন।
উল্লেখ্য যে, “পিয়াইন নদী খনন প্রকল্প ” বাস্তবায়ন করতে ১৯৭৫ সালে তৎকালীন নৌ পরিবহনমন্ত্রী মরহুম আব্দুর রব সেরনিয়াবাতের নিকট দরখাস্ত প্রদান করেন। তিনি সরকারের সংশ্লিষ্ট মন্ত্রনালয়ে বার বার আবেদন নিবেদন করেন।উনার আবেদন নিবেদনের প্রেক্ষিতে জাইকার মাধ্যমে সমীক্ষা হয়।পরবর্তীতে মরহুম এম তৈয়বুর রহমান মৃত্যুর পূর্ব মূহুর্ত পর্যন্ত সংশ্লিষ্ট দফতরে আবেদন নিবেদন, অনুনয়, বিনয় করে গেছেন।কিন্তু পরিতাপের বিষয় ২০১৩ সালের ১০ই মার্চ উপজেলা চেয়ারম্যান থাকা অবস্থায় বৃহত্তর জৈন্তিয়া বাসীকে শোকের সাগরে ভাসিয়ে চিরতরে না ফেরার দেশে চলে যান।
তিনি আমৃত্যু পিয়াইন নদী খনন প্রকল্প বাস্তবায়নের আকুতি জানিয়ে গেছেন,এতদঞ্চলের মানুষকে বন্যার প্রাকৃতিক দূর্যোগের হাত থেকে রক্ষা করার চেষ্টা করে গেছেন। মরহুমের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা রেখে আজও বৃহত্তর জৈন্তাবাসী সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে দাবী “পিয়াইন নদী খনন প্রকল্প ” টি বাস্তবায়ন করার।